দেশপ্রেমী বনাম দেশদ্রোহী: একটি অভিজ্ঞতা।
কয়েকদিন আগেই কলকাতার ইডেন উদ্যানে T20 ওয়ার্ল্ড কাপে ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেট যুদ্ধ হয়ে গেল। সেই ব্যাট বলের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বাঙালির ঘাড়ে দেশপ্রেমের যে গুরুভার চেপে বসেছিল(খানিকটা যেচেই চাপিয়ে নিয়েছিল আরকি) তার সামনাসামনি হয়ে একটি চমৎকার অভিজ্ঞতার কাহিনী লিখে ফেলার ঝুঁকি নিয়েই ফেললাম।
অভিজ্ঞতা ১- খেলার আগের দিন কথা হচ্ছিলো কয়েকজন বন্ধুতে মিলে, আলোচনা যা হয়ে থাকে। ইতিহাস-টাস টেনে এনে কে কবে জিতেছে,কবার জিতেছে,সেবার কোন রঙের জার্সি পড়েছিল,সেবার সৌরভ ছিল( খেলোয়াড় হিসাবে,প্রেসিডেন্ট নয়),এবার বিরাট খেলে দেবে,ইত্যাদি নানান বিশ্লেষণ এবং তার সাথে 'টিকেট পেলাম না রে' বলে হাহাকার মাঝে মধ্যেই উঠছিলো। তা এমন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার মাঝে আমি বেশ শান্ত গলায় একবার বলে ফেললাম, 'এবার পাকিস্তান টিম বেশ ভালো,ভারত হেরে যাবে হয়তো '
সব বাক্য মাঝপথেই থেমে গেল,সব মাথা ঘুরে গেল আমার দিকে,এমন আশ্চর্য ভাবে বাকিরা আমার দিকে তাকাতে লাগলো যেন আমি সদ্য মঙ্গলগ্রহ থেকে এসে পড়লাম।
আমার এক বন্ধু প্রথম বাক্যটি(exclamatory sentence)প্রকাশ করলো,"তুই তো দেশদ্রোহী দেখছি রীতিমতো"
নতুন সম্বোধনের ধাক্কায় তখন আমার আশ্চর্য হবার পালা।কানহাইয়া নামক এক যুবকের সাথে একদম এক সারিতে চলে যাবো তা তো বুঝিনি। আমার বাক্যে কোথাও দেশ বা সংবিধানকে গালাগালি দিলাম না তো?? নিজের বাক্যের রিপিট করে দেখি মনের মধ্যে। নাহ! কেবলমাত্র টিমের বিচার করেই তো বক্তব্যটা রেখেছিলাম। কি জানি!! শিবঠাকুরের আপন দেশে আইনকানুন সর্বনেশে। কেন ভারত হারতে পারে,তার একটা খেলোয়াড়ি ব্যাখ্যা দিতে যাচ্ছিলাম,কিন্তু সেটা শোনার পর যদি সন্ত্রাসবাদী বলে?? তাই আর কথা না বলে টিকেট কেন পাওয়া যাচ্ছে না তার একটা ব্যাখ্যা দিয়ে বক্তব্য শেষ করলাম।
সব বাক্য মাঝপথেই থেমে গেল,সব মাথা ঘুরে গেল আমার দিকে,এমন আশ্চর্য ভাবে বাকিরা আমার দিকে তাকাতে লাগলো যেন আমি সদ্য মঙ্গলগ্রহ থেকে এসে পড়লাম।
আমার এক বন্ধু প্রথম বাক্যটি(exclamatory sentence)প্রকাশ করলো,"তুই তো দেশদ্রোহী দেখছি রীতিমতো"
নতুন সম্বোধনের ধাক্কায় তখন আমার আশ্চর্য হবার পালা।কানহাইয়া নামক এক যুবকের সাথে একদম এক সারিতে চলে যাবো তা তো বুঝিনি। আমার বাক্যে কোথাও দেশ বা সংবিধানকে গালাগালি দিলাম না তো?? নিজের বাক্যের রিপিট করে দেখি মনের মধ্যে। নাহ! কেবলমাত্র টিমের বিচার করেই তো বক্তব্যটা রেখেছিলাম। কি জানি!! শিবঠাকুরের আপন দেশে আইনকানুন সর্বনেশে। কেন ভারত হারতে পারে,তার একটা খেলোয়াড়ি ব্যাখ্যা দিতে যাচ্ছিলাম,কিন্তু সেটা শোনার পর যদি সন্ত্রাসবাদী বলে?? তাই আর কথা না বলে টিকেট কেন পাওয়া যাচ্ছে না তার একটা ব্যাখ্যা দিয়ে বক্তব্য শেষ করলাম।
অভিজ্ঞতা ২- খেলা শেষ,বিরাট কোহলির বিরাট ইনিংসে ভর করে 'চিরশত্রু' পাকিস্তানকে হারিয়েছে ভারত। চারদিকে বাজি-টাজী ফাটছে,হইহই ভাব বেশ। খুশির আবহাওয়া।দারুন উপভোগ করছি সবাই। কলকাতায় পাকিস্তানকে হারানো একটা চমৎকার সাফল্য। ফেসবুকে ব্যঙ্গ চিত্র আর জোকসের ছড়াছড়ি। ইতিমধ্যে whatsapp খুললাম:১০০ এর উপর মেসেজ এসে গেছে গ্রূপে গ্রূপে।
আমার স্কুলের বন্ধুদের গ্রূপের উপর নজর দেব ঠিক করলাম প্রথমে। তা বেশ মজাদার কিছু জোকস,ছবি,ভিডিও জোগাড় হলো। ইতিমধ্যে দেখি,একজন(নাম অজ্ঞাত রাখতে হচ্ছে) খেলা ছেড়ে পুরো পাকিস্তানিদের উপরেই গায়ের ঝাল ঝাড়ছে। তা কি ব্যাপার বোঝার জন্য আগের কথাবার্তা পড়লাম একটু। বোঝা গেল যে সে গ্যালারিতে(একজন ভাগ্যবান) ছিল এবং সেখান থেকে স্পষ্ট শুনেছে যে পাকিস্তানের একজন প্লেয়ার দর্শকদের গালাগালি দিলো। তা থেকে তার ধারণা হয়েছে সব ব্যাটা পাকিস্তানী এমন অভদ্র। তা আমি কিছু বলার আগেই দেখি,আমাদের আরেক স্কুলবন্ধু প্রতিবাদী মূর্তি ধারণ করেছে।তাদের কথা কাটাকাটির মাঝে আমি ঢুকে পরে শুধু বললাম,ভাই আমি পূর্ববর্তী বন্ধুর প্রতিবাদকে সমর্থন করি,এরকম ভাবে একজনের জন্য গোটা দেশকে দোষারোপ করিস না। দেশপ্রেমী মুহূর্তে রিপ্লাই দিলো,"তুই ভাই JNU তে গিয়ে প্রফেসরী কর"। আগের দিন কানহাইয়ার সাথে এক সারিতে বসে ছিলাম বলে এবার আর চমকালাম না। সত্যি,আবার দেশদ্রোহীর মতো কথা বলে ফেলেছি। তবে এবার ব্যাপারটা একটু অন্যরকম হলো আরকি! গ্রূপে দেশদ্রোহীর সংখ্যা দেখা গেল বেশি। সবাই মিলে দেশপ্রেমীকে ঝাড়া ৪৫ মিনিট বোঝানোর পর তার মাথায় ঢুকলো আমরা কেউ পাকিস্তানের সমর্থক নই,আমরা শুধু নৈতিকতার কথা বলছি। খানিকক্ষন গাঁইগুঁই করে দেশপ্রেমী হার স্বীকার করে নিলো।
হাঁফ ছাড়লাম। ভারতবর্ষ'ও হাঁফ ছাড়লো মনে হলো।
আমার স্কুলের বন্ধুদের গ্রূপের উপর নজর দেব ঠিক করলাম প্রথমে। তা বেশ মজাদার কিছু জোকস,ছবি,ভিডিও জোগাড় হলো। ইতিমধ্যে দেখি,একজন(নাম অজ্ঞাত রাখতে হচ্ছে) খেলা ছেড়ে পুরো পাকিস্তানিদের উপরেই গায়ের ঝাল ঝাড়ছে। তা কি ব্যাপার বোঝার জন্য আগের কথাবার্তা পড়লাম একটু। বোঝা গেল যে সে গ্যালারিতে(একজন ভাগ্যবান) ছিল এবং সেখান থেকে স্পষ্ট শুনেছে যে পাকিস্তানের একজন প্লেয়ার দর্শকদের গালাগালি দিলো। তা থেকে তার ধারণা হয়েছে সব ব্যাটা পাকিস্তানী এমন অভদ্র। তা আমি কিছু বলার আগেই দেখি,আমাদের আরেক স্কুলবন্ধু প্রতিবাদী মূর্তি ধারণ করেছে।তাদের কথা কাটাকাটির মাঝে আমি ঢুকে পরে শুধু বললাম,ভাই আমি পূর্ববর্তী বন্ধুর প্রতিবাদকে সমর্থন করি,এরকম ভাবে একজনের জন্য গোটা দেশকে দোষারোপ করিস না। দেশপ্রেমী মুহূর্তে রিপ্লাই দিলো,"তুই ভাই JNU তে গিয়ে প্রফেসরী কর"। আগের দিন কানহাইয়ার সাথে এক সারিতে বসে ছিলাম বলে এবার আর চমকালাম না। সত্যি,আবার দেশদ্রোহীর মতো কথা বলে ফেলেছি। তবে এবার ব্যাপারটা একটু অন্যরকম হলো আরকি! গ্রূপে দেশদ্রোহীর সংখ্যা দেখা গেল বেশি। সবাই মিলে দেশপ্রেমীকে ঝাড়া ৪৫ মিনিট বোঝানোর পর তার মাথায় ঢুকলো আমরা কেউ পাকিস্তানের সমর্থক নই,আমরা শুধু নৈতিকতার কথা বলছি। খানিকক্ষন গাঁইগুঁই করে দেশপ্রেমী হার স্বীকার করে নিলো।
হাঁফ ছাড়লাম। ভারতবর্ষ'ও হাঁফ ছাড়লো মনে হলো।
Comments
Post a Comment